সিলেটে পাঠা মবশ্বিরের দখলে নিরাময় ক্লিনিক | তদন্ত রিপোর্ট

বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
মোহনগঞ্জ বাজারের সুইচগেট মোড়ে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা—দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি এলাকাবাসীর সিলেটে ১৩ কোটি টাকার বালু ৩৮ লাখে বিক্রি জাফলং এএসআই রেজওয়ানকে ম্যানেজ করে বালু-পাথর হরিলুট রৌমারীতে লকডাউন বিরোধী কর্মকাণ্ডে তিনজন গ্রেফতার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গান পাউডার ও ককটেল তৈরীর সরঞ্জামাদি সহ আটক ১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ (নাচোল-গোমস্তাপুর- ভোলাহাট) আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন পেলেন আমিনুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠিত নাচোলে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৫ উদযাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভাঙ্গুড়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক, পুলিশের উদাসীনতার অভিযোগ ভাঙ্গুড়ায় জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ
সিলেটে পাঠা মবশ্বিরের দখলে নিরাময় ক্লিনিক

সিলেটে পাঠা মবশ্বিরের দখলে নিরাময় ক্লিনিক

Manual7 Ad Code

তদন্ত রিপোর্ট ডেস্ক: ৯৬ -২০০১ আওয়ামীলীগ শাসনামল। সিলেট শহরে দাপিয়ে বেড়ায় তাদের ছাত্র সংগঠনের দুর্ধর্ষ ক্যাডাররা। শহরে রাজত্ব করে বেশ কয়েকটি গ্রূপ। এরমধ্যে নাসির গ্রূপ নামে খ্যাত গ্রূপটির অবস্থান নগরীর তেলি হাওর এলাকায়। এই গ্রূপেরই সদস্য ছাত্রলীগ ক্যাডার মবশ্বির তখন এই শহরের আতংক হয়ে উঠে। তার মূল বাড়ি বিশ্বনাথে। পিতা মৃত আশরাফ আলী। দিনে দিনে সে দুর্ধর্ষ অপরাধীর দিকে ধাবিত হয়। তার মূল পেশা ছিল ছিনতাই। শহরজুড়ে ভয়ংকর ছিনতাই নেটওয়ার্ক তৈরী করে সে। বিশেষ করে এয়ারপোর্ট রোডে বিদেশগামী যাত্রীদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম পাঠা মবশ্বির। শরীর গায়ে গতরে বিশালদেহী হওয়ায় তাকে সবাই পাঠা মবশ্বির বলে ডাকতো। বিমানবন্দর সড়কে প্রায়ই যাত্রীদের লাগেজ ও ব্যাগ ছিনতাই করতো সে।

Manual1 Ad Code

মোবাশ্বিরের নেতৃত্বে একটি আন্তঃজেলা ডাকাতদল তৈরী হয়। ১৯৯৮ সালে সিলেট ফেঞ্চুগঞ্জ রোডের নির্জন পারাইরচক ৩০টির মতো ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। সে সময়ের আন্তঃজেলা ডাকাতদলের নেতা মবশ্বির এই ডাকাতিতে নেতৃত্ব দিয়ে পুরো সিলেটে আলোচিত হয়।

১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকারীদল সিলেট আওয়ামীলীগকে ছিনতাইকারী মোবাশ্বির এর মতো ছিচকেদের সামলাতেই ঘাম ছুটে যায়। এবং এদের কারণেই ২০০১ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে ভোট দেয়নি জনগণ। তারপর ২০০১-০৬ জোট সরকারের সময় সে এলাকাছাড়া হয় । পালিয়ে যায়। ০৮ এ আবার লীগ ক্ষমতায় আসলে ছিনতাইকারী মোবাশ্বিররা যেন হাতে আসমান পায় । তার নেতৃত্বে নগরীতে শুরু হয় দখলের মহোৎসব। চৌহাট্টা সদর হাসপাতালের জায়গায় জোর করে ন্যায্যমূল্যের ফার্মেসী বানিয়ে ফেলা হয়। লীজের নাম করে শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিনামূল্যের নামকাওয়াস্তে ভাড়ায় এই ফার্মেসি শহরের অন্যান্য ফার্মেসী ব্যবসার স্বাভাবিক ব্যবসা বিনষ্ট করে। সদর হাসপাতাল ও ওসমানী হাসপাতালের বিনামূল্যের ঔষধ মেডিকেল সরঞ্জামাদি এই ফার্মেসিতে রাখা হতো।

Manual2 Ad Code

ধীরে ধীরে হাসিনা যখন ডেভিল স্বৈরাচারী রূপে আবির্ভুত হওয়া শুরু করলো। লন্ডন থেকে উড়ে এসে বিনা ভোটে মেয়র হলেন আনোয়ারুজ্জামান। কদিন আনোয়ারের নির্বাচনে খেটে মবশ্বির যেন আরও বেপরোয়া। সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে সর্বত্র তার হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতিসহ চাঁদাবাজি চলতে থাকে। সিটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে এমন ভাষায় কথা বলতো মনে হতো সে যেন নিজে মেয়র। টাকার বিনিময়ে টেন্ডার দালালি , টাকার বিনিময়ে মানুষের কাজকর্ম নিয়ে সিটি কর্তাদের চাপ দিতো। আনোয়ারের প্রভাব খাটাতো।

Manual8 Ad Code

আনোয়ার এর সাথে ঘনিষ্টতার কারণে নগরজুড়ে দখলবাজিতে নেমে পরে। সবচেয়ে আলোচিত হয় আস্ত একটি ক্লিনিক দখল। নগরীর নবাব রোডের নিরাময় ক্লিনিকটি দখল করে ফেলে সুকৌশলে।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রমতে- নবাব রোড বিদেশ বসে এখনো এসব থেকে ভাড়া তুলছে সে। এছাড়া জুলাই আগস্টে সিলেটের নিরীহ ছাত্রজনতার উপর অত্যাধুনিক বন্দুক দিয়ে গুলি চালায় সে। এই সময়টায় কসাইয়ের ভূমিকায় নামে মবশ্বির। তার বাহিনীকে ছাত্র জনতার উপর লেলিয়ে দেয়। নানা অপরাধে সম্পৃক্ত শীর্ষ ডেভিল সন্ত্রাসী মবশ্বিরকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে ছাত্র জনতা।

Manual8 Ad Code

সূত্রমতে আরও জানা যায়- নিরাময় ক্লিনিকের জায়গা ও ভবনের মূল মালিক আব্দুল্লাহ আসাদ আল হাফিজ। তিনি সিলেটের সনামধন্য ডাক্তার খালিক সাহেবকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এটি ভাড়া দেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হঠাৎ লোকবল নিয়ে এটি দখল করে মবশ্বির ও তার বাহিনী। কোন সময় ভাড়া দিতো। বেশিরভাগ মাসেই ভাড়া দিতো না। এ নিয়ে প্রয়াত হাফিজ সাহেবের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি উচ্ছেদ মামলা করা ২০১৯ সালে। যে উচ্ছেদ মামলায় যুবলীগ ক্যাডার মবশ্বিরকে ৫ নং আসামি করা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ৫ আগস্ট এর আগেই মবশ্বির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।

নিরাময় ক্লিনিকের ভূমি মালিকদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়- যুবলীগ ক্যাডার মবশ্বির আমাদের জায়গা ও ভবন প্রভাব খাঁটিয়ে দখল করে রেখেছে। তার হুমকি-ধামকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছি। আমাদের মামলা চলমান আছে। আশা করি আদালতে ন্যায্য বিচার আমরা পাবো।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Add



© All rights reserved © tadantareport.com
Design BY Web WORK BD
ThemesBazar-Jowfhowo

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code
error: Content is protected !!